অভুক্তরাও এই সমাজের-ই

 

সম্প্রীতি মেটে
নবম,
কামিনী

 

 

মানুষ সমাজবদ্ধ জীব, কিন্তু বর্তমানের অপ্রীতিকর শ্রেণী বিভাজন, এক শ্রেণীকে বঞ্চিত করে অপর শ্রেণীর প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাহিদা এক বড়ো প্রশ্নের, সামনে আনে, সমাজের গঠনগত দিকের।

বর্তমানের অসহ্য গরম থেকে এক দন্ড রেহাই পেতে বাবার সাথে গিয়েছিলাম গঙ্গানদীর মনোরম হাওয়াতে প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে। গঙ্গার হৃদয়গ্রাহী বাতাসের মাঝে আমি ব্যাকুল মনে বিস্কুটের প্যাকেট নিয়ে ব্রিজের উপর দিয়ে হেঁটে চলেছি। হঠাৎই লক্ষ্য করি বাবা পাশে নেই। মুহূর্তের মধ্যে এক প্রগাঢ় ভয় সঞ্চার করলো আমার মনে। দিগবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে উদ্ভ্রান্তের মতো ছুটতে লাগলাম। হঠাৎ চোখে পরে ময়লা জামা পরা একটি লোক, সেই রূগন লোকটির সাথে একটি মেয়ে। মেয়েটি বয়স ৫ বছরের অধিক নয়। কিন্তু অদ্ভুত হল তাদের এক তীক্ষ্ণ সুকরুণ দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে ছুটে আসে। সেই অবস্থায় তাকে ছেলে ধরা ভেবে আমি আরো ভয় জড়জড়িত ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌঁড়াতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পরে যাই এবং বিস্কুটের প্যাকেটটা ছিটকে যায় হাত থেকে। ভয়তে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। এমন সময় দেখি লোকটি বিস্কুটের প্যাকেট হাতে তুলে নিয়ে বলছে “ আমরা বেশ কয়েক দিন ধরে অভুক্ত ছিলাম, এই খাবারটির জন্য ধন্যবাদ” মেয়েটি এক মায়াভরা তৃপ্তি নিয়ে বিস্কুট খেতে লাগলো। এই দৃশ্য দেখে আমি হতভম্ব হয়ে গেছি। যাকে আমি একটি ছেলেধরা ভেবে ভ্রম করেছি সে আসলে আমাদের সমাজের এক অভুক্ত মানুষ। এবার উপলব্ধি করলাম আমাদের সমাজ কতটা ত্রুটি পূর্ণ। একশ্রেণী প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার পায়, যা তারা নষ্ট করে। আর অপর শ্রেণী প্রতিদিনের জীবনধারণের সামান্য আহার টুকু পায় না।