বিট্টুর স্বপ্ন পূরণ
স্পন্দন কারক
পঞ্চম শ্রেণী
বকুল
কল্পপুর গ্রামের ছেলে বিট্টু। তারা ছিল খুবই দরিদ্র। বিট্টু ছোট থেকেই ক্রিকেট খেলতে খুব ভালোবাসে। পাড়ার যেখানেই ক্রিকেট খেলা হতো সেখানেই বিট্টু খেলা দেখতে যেত। পাড়ার সবাই সেটা জানতো। যে গ্রামের যেখানেই ক্রিকেট খেলা হতো সেখানেই বিট্টু থাকবেই। একদিন ক্রিকেট দলের কোচ কয়েকজন ছেলেকে খেলার জন্য ডাকলো। তাদের মধ্যে বিট্টু ও ছিল। বিট্টুর ব্যাটিং করার ধরন তাকে মুগ্ধ করলো। খেলার শেষে কোচ বিট্টুর বাবার সাথে দেখা করতে চাইলো। তখন বিট্টু বলল “আমার তো বাবা নেই”। কিন্তু বাড়িতে মা আছে।কোচ তার মায়ের সাথে দেখা করতে চাইলেন। বিট্টু মাকে দুদিন বাদে কোচের কাছে নিয়ে গেল। কোচ তার মাকে বলল আপনি কি বিট্টু কে ক্রিকেটে ভর্তি করবেন, কারন ক্রিকেটটা বিট্টু খুব ভালো খেলে এবং বোঝে। এ কথা শুনে বিট্টুর মা বললেন তাদের দারিদ্রতার কথা। তিনি ক্রিকেটের জন্য খরচ করতে পারবেন না। একথা শুনে বিট্টু খুব উদাস হয়ে পড়ল। কোচ কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর বিট্টুর মাকে জানালো যে তিনি বিনা খরচে বিট্টুকে ক্রিকেট শেখাবেন। এরপর থেকে কোচ আস্তে আস্তে বিট্টুকে ব্যাট বল হাতের গ্লাস জুতো সব কিনে দিলেন। প্রতিদিন বিকালে কোচের কাছে ক্রিকেট প্র্যাকটিস করতে যেত। আস্তে আস্তে সে একজন খুব ভালো খেলোয়াড় হয়ে উঠলো। এভাবেই একদিন প্রথম ক্রিকেট ম্যাচ এসে উপস্থিত হলো। সে খুব আনন্দিত কিন্তু প্রথম ম্যাচে ই সে দু’বলে আউট হয়ে গেল। তাতে তার মনে হল এত প্র্যাকটিস করেও হলো না। তার জেদ বেড়ে গেল। তাই সে রাত দিন এক করে প্র্যাকটিস করতে থাকলো। দ্বিতীয় ম্যাচে সে ষাট রান করল। দর্শকরা বিট্টুর খেলায় মুগ্ধ হল। খেলতে খেলতে তারপর বিট্টু বাংলা টিমের হয়ে খেলার সুযোগ পেল। সেখানে বিট্টু ১০০ রানের পরেও খেলে যাচ্ছে। সব দর্শক অবাক হয়ে বিট্টুর খেলা দেখছে। খেলা প্রায় শেষের দিকে আর তিন বলে দশ রান চাই। প্রথম বলে ছয় মারলো এবং তারপর বলে কোন রান হলো না। সেই সময় সারা স্টেডিয়াম চুপ হয়েছিল এবং শেষ বলে চার মেরে বাংলা দলকে সে জিতিয়ে দিল। খেলার শেষে প্রতিটি খেলোয়াড় বিট্টু কে জড়িয়ে ধরে তাকে অভিনন্দন জানায়। দর্শকরা উল্লাসে ফেটে পড়ে কোচ এসে যখন তাকে অভিনন্দন জানায় তখন বিট্টুর দুচোখ জলে ভরে আছে তবে সেটা দুঃখের নয় আনন্দের জল।